২০২৫ সালের ৩ মে, রাজধানী ঢাকার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এক বিশাল মহাসমাবেশের আয়োজন করে।
এটি ছিল সংগঠনটির ২০১৩ সালের শাপলা চত্বর ঘটনার পর সবচেয়ে বড় জমায়েত, যেখানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লাখো মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
সমাবেশে উপস্থিত হেফাজতের শীর্ষস্থানীয় নেতারা একে “ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে জনমত গঠনের প্ল্যাটফর্ম” হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
তারা সরকারের সমালোচনা করে বলেন, ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ইসলামী শিক্ষাকে নানাভাবে খর্ব করা হচ্ছে, যা একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের জন্য উদ্বেগজনক।
সমাবেশ থেকে হেফাজত ১২ দফা দাবি উত্থাপন করে, যার মধ্যে রয়েছে: নারীনীতি বাতিল, ইসলামবিরোধী কার্যক্রম বন্ধ, কুরআনের অবমাননার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা রক্ষা এবং ইসলামপন্থী নেতাদের বিরুদ্ধে সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার।
তাদের দাবিগুলোর অন্যতম একটি ছিল ২০১৩ সালের শাপলা চত্বর অভিযানের নিরপেক্ষ তদন্ত ও বিচার।
হেফাজতের মহাসচিব জিন্নাতুল ইসলাম বলেন, “আমরা কারো বিরুদ্ধে নই, তবে ইসলাম ও নবী করিম (সা.)-এর অবমাননা বরদাশত করব না। যারা ইসলাম নিয়ে খেলতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ প্রতিরোধ গড়ে তুলব।”
তিনি আরও বলেন, “২৩ মে আমরা দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করব, যাতে সকল স্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করে।”
এই সমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজধানীজুড়ে ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) জানায়, কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই সমাবেশ শুধু ধর্মীয় নয়, বরং একটি রাজনৈতিক বার্তা বহন করে।
অনেকে ধারণা করছেন, ২০২6 সালের জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে হেফাজত রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় হওয়ার কৌশল নিচ্ছে।
তবে মানবাধিকার সংস্থাগুলো হেফাজতের কিছু দাবির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, বিশেষ করে নারীনীতি বাতিল ও শিক্ষা সংস্কার বাতিলের মতো বিষয়গুলোকে পশ্চাদমুখী পদক্ষেপ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন তারা।